ঢাকা শনিবার, ০৪ জানুয়ারি, ২০২৫, ২১ পৌষ ১৪৩১

তৃতীয়বারের মতো প্রতারণার শিকার আফজাল হোসেন

ভোরের মালঞ্চ | অনলাইন ডেস্ক ডিসেম্বর ১৪, ২০২৪, ০৭:২০ পিএম তৃতীয়বারের মতো প্রতারণার শিকার আফজাল হোসেন

বর্তমান সময়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানাভাবে প্রতারণার ঘটনা ঘটছে। সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে তারকারাও এসবের ভুক্তভোগী হচ্ছেন। বিশেষ করে অনলাইনে কেনাকাটার ক্ষেত্রে নানাভাবে প্রতারিত হওয়ার ঘটনা প্রতিনিয়ত সামনে আসছে। 

 

এবার তেমনই এক ঘটনা ফেসবুকে তুলে ধরলেন অভিনেতা আফজাল হোসেন। অনলাইন থেকে কেনাকাটা করতে গিয়ে তৃতীয়বারের মতো প্রতারণার শিকার হয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে চরম ক্ষুব্ধ ও বিরক্ত তিনি।

 

অনলাইনে প্রতারণার ঘটনা তুলে ধরে আফজাল হোসেন লিখেছেন, ‘এই অনলাইনের সুবিধা এসে অনেক মানুষ নিজের পায়ে দাঁড়ানোর সাহস, স্বনির্ভর হওয়ার গৌরব অর্জন করেছেন। অনেকেই এই সুবিধা থাকার কারণে নিজের ভিতরে যে সৃজনশীলতা আছে, তার চর্চায় নিবেদিত হওয়ার প্রেরণা পেয়েছেন এবং প্রতিষ্ঠার পথেও এগিয়ে চলেছেন। বহুরকমের খাদ্যদ্রব্য, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে উৎপাদিত বিখ্যাত পণ্যসমূহ অনলাইনে ঘরে বসেই কেনাকাটা করার সুযোগ হয়েছে বলেই মানুষ বহু নতুন এবং অচেনা পণ্যদ্রব্যে আগ্রহী হন, কেনাকাটা করে থাকেন।’

 

‘ভেবে দেখুন, সবাই কিন্তু গুরুত্ব দিয়ে পণ্য ও প্রতিষ্ঠানের প্রতি বিশ্বাস স্থাপনের চেষ্টা করে থাকেন। সবাই জানেন ও মানেন বিশ্বাসী করে না তুলতে পারলে ক্রেতা অনলাইনে কেনাকাটা করতে চাইবেন না। দুনিয়া টিকে আছে ভালো মানুষ ও মানুষের ভালো গুণপনার কারণে কিন্তু কি ভালো আর কি মন্দ তা বুঝতে বা আলো কতো দরকারি তা বুঝতে জগতে অন্ধকারও দিয়েছেন সৃষ্টিকর্তা। তার বিচিত্র উদাহরণ প্রায়ই দেখা যায়, চোখে পড়ে।’

 

অভিনেতা এরপর লেখেন, ‘আজ নিয়ে অনলাইন কেনাকাটায় আমি তিনবার দারুণভাবে ঠকেছি। প্রথমবার একটা ছোট্ট বেডসাইড টেবিল কিনে একদিনও ব্যবহার করতে পারিনি। দ্বিতীয়বার ঠকেছি মোবাইল ফোনের চার্জার ক্যাবল কিনে। তা একবারও ব্যবহার করা যায়নি। যোগাযোগ করলে তারা বদলে দেবে বলেছিল, শেষ পর্যন্ত দেয়নি এবং পরে আর যোগাযোগও করা যায়নি। কিছুদিন পরে লক্ষ্য করেছি, এরা দু তিনটি পেজ খুলে একই পণ্য বিক্রি করে থাকে। তার মানে তারা আগে থেকেই জানে একবার পণ্যটি কেউ কিনলে পরবর্তীতে একই ঠিকানা থেকে খারাপ পণ্যটি কিনবে না। এরকম মনোভাব থাকা মানে অসাধুতা। এতো অসততা দিয়ে তো ব্যবসায়ে উন্নতি হওয়া মোটেও সম্ভব নয়। তাহলে এসব কাণ্ড কেনো করে থাকে মানুষ!’

 

আজকের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে আফজাল হোসেন লেখেন, ‘আজ সকালে মনে হল কেউ আমার কান মলে দিয়েছে। মনে হল অকারণেই দু তিনটা থাপ্পড় খেলাম। আমি ছবি আঁকি। রঙের টিউব, কৌটা রাখার জন্য চাকা লাগানো ট্রলিপ্যাক কেনা হয়েছিলো দোকান থেকে। দুটো ছিল, আর একটা হলে ভালো হতো মনে করে ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দেখে অনলাইনে অর্ডার দিয়ে ফেলি। গতকাল সেটা বাসায় আসে। আজ সকালে বাক্সটা খুলি। খুলেই হা হয়ে যাই। এতো খারাপ মানের সেটা, মনে হচ্ছে ব্যবহার না করে ফেলে দিতে পারলেই ভালো।’

 

যারা এসব করছেন, তাদের নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন এই অভিনেতা। তার কথায়, ‘মানুষ এতটা অন্যায় করে কীভাবে? এটা তো শতভাগ প্রতারণা। ক্রেতা পয়সা দিয়ে জিনিস কিনবে কিন্তু বিক্রেতা ভালো করেই জানে, জিনিসটা কিনে কেউ ব্যবহার করতে পারবেনা। ফেসবুকে ভালোদের সাথে খুব খুব খুব খারাপ বিক্রেতা ব্যবসায়ীরাও আছে। যারা ছবিতে যা দেখায় তেমন পণ্য সরবরাহ করে না। এরা অতিমাত্রায় অসৎ, অবিবেচক- এদের কাছ থেকে পণ্য কেনার সময় ভেবে চিন্তে, দেখে বুঝে, সাবধানে কেনাই উচিত।’

 

অনলাইন ক্রেতাদের সাবধান হওয়ার পরামর্শ দিয়ে তিনি লেখেন, ‘সর্বদা সাবধানে থাকতে হবে চীন দেশ থেকে আমদানিকৃত পণ্যের বেলায়। তার মানে এই নয়, চীনের পণ্য খারাপ হয়ে থাকে। আমাদের দেশে অতি মন্দ শ্রেণির একদল ব্যবসায়ী রয়েছে যারা বেশি লাভের আশায় চীন থেকে কম দামের খুবই নিম্নমানের পণ্য আমদানি করে থাকে।’

 

সবশেষে এই অভিনেতা লিখেছেন, ‘বুঝি না এতো ফন্দিফিকির করে কোনোকালে কেউ উন্নতিলাভ করতে পেরেছে কিনা? হতে পারে এরা বিশেষ চরিত্রের- প্রতারণা করে তারা সুখ পায়। দশটা বা তার অধিক মানুষ খুন করেছে- এমন গৌরব করা মানুষ তো সমাজে আছে।’

Side banner