দেশের রাজনীতিতে অনেকটা কোণঠাসা হয়ে পড়ায় নিজ দল লিবারেল পার্টির সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিতে পারেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো।
বিভিন্ন সূত্রের বরাত দিয়ে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম দ্য গ্লোব অ্যান্ড মেইলের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ট্রুডো কবে পদত্যাগের ঘোষণা দিতে পারেন, সে বিষয়ে তারা নিশ্চিত নন। তবে বুধবার একটি গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় ককাস বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। তার আগেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাতে পারেন প্রধানমন্ত্রী।
তবে গ্লোব অ্যান্ড মেইলের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। নতুন নেতা বাছাইয়ের আগ পর্যন্ত জাস্টিন ট্রুডো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে থাকবেন কিনা সেবিষয়টি এখনো পরিষ্কার না।
রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, পদত্যাগের ঘোষণার পর ট্রুডো তৎক্ষণাৎ গদি ছেড়ে দেবেন নাকি নতুন প্রধানমন্ত্রী মনোনীত হওয়ার আগ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করবেন তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। ট্রুডোর সম্ভাব্য এই পদত্যাগের ফলে দেশটির ক্ষমতাসীন এই দলটিকে এমন এক সময়ে স্থায়ী প্রধান ছাড়াই রাজনৈতিক ময়দানে ছেড়ে দেবে যখন জরিপগুলোতেও দেখা যাচ্ছে যে- চলতি বছরের অক্টোবরের শেষের দিকে অনুষ্ঠিত হতে হওয়া নির্বাচনে লিবারেলরা রক্ষণশীলদের কাছে খারাপভাবে হেরে যাবে।
একাধিক সূত্রের বরাত দিয়ে দ্য গ্লোব অ্যান্ড মেইল জানায়, লিবারেল পার্টির অন্তর্বর্তীকালীন নেতা ও কানাডার অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিতে অর্থমন্ত্রী ডোমিনিক লেব্লাংক আগ্রহী কিনা সে বিষয়ে তার সঙ্গে আলোচনা করেছেন ট্রুডো। তবে লেব্লাংক নিজেই নির্বাচনে অংশ নিলে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা যাবে না।
প্রসঙ্গত, ট্রুডো ২০১৩ সালে লিবারেল পার্টির নেতা হিসাবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। সেসময় কানাডিয়ান এই দলটি গভীর সমস্যায় পড়েছিল এবং প্রথমবারের মতো হাউস অব কমন্সে তৃতীয় স্থানে নেমে গিয়েছিল। পরে ২০১৫ সালে কানাডার প্রধানমন্ত্রী হন জাস্টিন ট্রুডো। টানা ৯ বছর ধরে তিনি এ পদে আছেন। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অর্থনীতিসহ নানা চাপে পড়েছেন ট্রুডো। তবে গত বছরের ডিসেম্বরে কানাডার উপপ্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ড পদত্যাগ করেন।
ট্রুডোর সঙ্গে বিরোধের জেরেই তিনি পদত্যাগ করেছেন। একসময় ট্রুডোর ঘনিষ্ঠ মিত্র ছিলেন ফ্রিল্যান্ড। তার পদত্যাগের পর ট্রুডোর সংকট আরও বেড়ে যায়। এছাড়া ২০ জানুয়ারি মার্কিন প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নিতে যাচ্ছে ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার প্রশাসনের সঙ্গে তালমিলিয়ে চলার জন্য সব দেশ কমবেশি চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এমন সময় ট্রুডোর পদত্যাগে কানাডায় নতুন সরকার নির্বাচনের জন্য দ্রুত ভোটের আয়োজনের দাবি জোরালো হয়ে উঠতে পারে।
আপনার মতামত লিখুন :