ঢাকা রবিবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১

‘যে গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ে তুলব, সেটি হবে সবার জন্য বাসযোগ্য’

ভোরের মালঞ্চ | অনলাইন ডেস্ক ডিসেম্বর ১৪, ২০২৪, ০৭:২৮ পিএম ‘যে গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ে তুলব, সেটি হবে সবার জন্য বাসযোগ্য’

প্রতিবন্ধীদের জীবনের মানোন্নয়নে বেশ কিছু পরিকল্পনার কথা জানিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, ‌আপনাদের প্রতিবন্ধকতা আমাদের সবার প্রতিবন্ধকতা। আমি বিশ্বাস করি, আপনাদের পেছনে রেখে আমরা কখনো এগিয়ে যেতে পারি না, আর এগোতে চাইও না।

 

আজ শনিবার সন্ধ্যায় আগারগাঁও এলজিআরডি মিলনায়তনে প্রতিবন্ধী নাগরিক শ্রেণির সঙ্গে মতবিনিময় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

 

তারেক রহমান বলেন, আমরা বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তিদের জন্য একটি মর্যাদাপূর্ণ, সক্ষম, এবং সমৃদ্ধ সমাজ গড়ে তুলতে দৃঢ় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমি ও আমার দল বিএনপি উপলব্ধি করি, আপনাদের সমস্যা ও কষ্টগুলো বাস্তব এবং গভীর। আপনাদের মনে রাখতে হবে, এই বাস্তবতায় আপনারা একা নন। আমরা সবসময় আপনাদের পাশে আছি এবং থাকবো।

 

তিনি বলেন, ‘আমরা সবাই মিলে একসাথে যে গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ে তুলবো, সেটি হবে সবার জন্য ফেয়ার, সবার জন্য ইনক্লুসিভ, সবার জন্য বাসযোগ্য এবং সবার জন্য উপভোগ্য।’

 

দেশে কিছু প্রাইভেট অর্গানাইজেশন শারীরিক প্রতিবন্ধীদের নানা ধরনের ট্রেনিং প্রদান করে উল্লেখ করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘তবে এই ট্রেনিং শেষে চাকরির ব্যবস্থা করতে গিয়ে তারা হিমশিম খায়। এই সমস্যার সমাধানে আমরা উদ্যোগ গ্রহণ করবো যাতে দেশের বড় ব্যবসাগুলো একটি নির্দিষ্ট শতাংশ শারীরিকভাবে চ্যালেঞ্জড ব্যক্তিদের নিয়োগ করতে উৎসাহিত হয়। উদাহরণস্বরূপ, বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তিদের নিয়োগ করলে, আমরা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোকে কিছু ট্যাক্স সুবিধা বা কমপ্লায়েন্স সার্টিফিকেট প্রদান করার চিন্তা করতে পারি।’

 

তিনি বলেন, বিএনপি সরকার গঠন করলে, জেলা পর্যায়ে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষায়িত স্কুল প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা থাকবে, যেখানে সাইন ল্যাঙ্গুয়েজ, ব্রেইলসহ ইনক্লুসিভ এডুকেশনের আধুনিক পদ্ধতি অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্টা করা হবে। পাশাপাশি, কারিগরি ও পেশাগত শিক্ষার মাধ্যমে কর্মজীবনে প্রবেশের সুযোগ তৈরি এবং প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য স্কলারশিপ ও প্রয়োজনীয় শিক্ষা উপকরণ সরবরাহের ব্যবস্থা বিবেচনা করা হবে।

 

তারেক রহমান বলেন, স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্রে, আমরা প্রতিটি জেলা সদর হাসপাতালে বিশেষায়িত স্বাস্থ্যসেবা ইউনিট স্থাপনের চেষ্টা করবো, যেখানে শারীরিক থেরাপি, মানসিক স্বাস্থ্যসেবা, এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসার আধুনিক সুবিধা থাকবে। আমরা প্রত্যন্ত অঞ্চলে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন জনগণের জন্য মোবাইল হেলথ ক্লিনিক চালুর উদ্যোগ গ্রহণ করবো। সহায়ক উপকরণ তৈরির জন্য কারখানা স্থাপন এবং আমদানির ক্ষেত্রে কর মওকুফের উদ্যোগ নেওয়ার পরিকল্পনা থাকবে। গুরুতর প্রতিবন্ধীদের জন্য নিবিড় পরিচর্যার বিশেষ কর্মসূচি প্রণয়ন করার চেষ্টা করা হবে।

 

আমাদের প্রতিশ্রুতি হলো বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তিদের জীবনের মানোন্নয়নে পদক্ষেপ গ্রহণ করা উল্লেখ করে তিনি বলেন, যার ভিত্তি হবে অর্থনৈতিক স্বাবলম্বিতা, সামাজিক সক্ষমতা এবং মানবিক মর্যাদা নিশ্চিত করা। আমাদের চিন্তার মধ্যে আছে, একটি স্বতন্ত্র অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠা করা, যা প্রতিবন্ধী ভাই-বোনদের সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা পরিচালনার পাশাপাশি বিভিন্ন মন্ত্রণালয় বা বিভাগের কার্যক্রম সমন্বয় করবে।

 

প্রতিবন্ধীদের উদ্দেশ্য করে তিনি আরও বলেন, আমি বিশ্বাস করি আপনারা কেউ প্রতিবন্ধী নন বরং আপনারা বিশেষভাবে সক্ষম নাগরিক। প্রত্যেকের রয়েছে অসীম সক্ষমতা। 

 

দুপুর ৩টা থেকে শুরু হওয়া এই মতবিনিময় সভায় প্রতিবন্ধীদের বিভিন্ন সংগঠন ও ব্যক্তি বক্তব্য রাখেন। এসময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

Side banner