ঢাকা শনিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৫, ৫ বৈশাখ ১৪৩২

দক্ষিণ আফ্রিকায় সালিশি বৈঠকে প্রবাসীকে টানাহেঁচড়া

ভোরের মালঞ্চ | অনলাইন ডেস্ক এপ্রিল ১২, ২০২৫, ০১:২৪ পিএম দক্ষিণ আফ্রিকায় সালিশি বৈঠকে প্রবাসীকে টানাহেঁচড়া

দক্ষিণ আফ্রিকার ইস্টার্নকেপ প্রদেশের ছোট শহর  মিসেস প্ল্যান টাউন সেন্টার সেখানে  কয়েকশ বাংলাদেশির বিভিন্ন ধরনের ব্যবসা করে আসছেন। সম্প্রতি পাওনা টাকা উদ্ধার করতে একটি সালিশি বৈঠক হয়। সেখানে এক প্রবাসীকে নিয়ে বাংলাদেশিদের মধ্যে টানাহেঁচড়ার ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

 

শনিবার (৫ এপ্রিল) দুপুরে সালিশি বৈঠকে এ ঘটনা ঘটে।

 

কমিউনিটি সূত্র থেকে জানা যায়, কেপটাউনের টাউন সেন্টারে মাদার প্ল্যান ইজি টেকইওয়ে খাবার দোকানে কাজ করছিলেন শওকত বিন আশরাফ  নামের চট্টগ্রাম লোহাগড়ার এক বাসিন্দা। করোনার আগে  শওকত বিন আশরাফের একটি মুদি দোকানে সাড়ে ৩ লাখ রেন্ড বিনিয়োগ করে অর্ধেক মালিকানা  ভিত্তিতে ব্যবসা করতে ইস্ট লন্ডনে যায় আলমগীর তালুকদার। টাকা দিয়ে দোকানে বুঝে নেন আলমগীর।  এর কিছু দিন পর শওকত বিন আশরাফ ডারবানে বেড়াতে যাবে বলে বের হয়ে যান।  এরই মধ্যে বাড়ির মালিক এসে  আশরাফকে খোঁজ করেন। এবং বলেন ৩ লাখ রেন্ড ভাড়া বাবদ পায় বলে দোকান ছেড়ে দিতে তাগাদা দেয়। পরে আশরাফের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি জানান দেশে চলে গেছে। সাড়ে তিন লাখ রেন্ড বাংলা টাকা প্রায় (২০ লাখ টাকা)বিনিয়োগ করার মাত্র  দুইমাসের মধ্যে শূন্য হাতে প্রতিষ্ঠান থেকে বের করে দিয়ে দোকান তালা ঝুলিয়ে দেন মালিক পক্ষ।

 

সে সময় দক্ষিণ আফ্রিকায় বিভিন্ন কমিউনিটি সংগঠন ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের কাছে বিচার চেয়ে  সহযোগিতা পায়নি বলে জানান ভোক্তভোগী আলমগীর তালুকদার।  

 

তিনি আরও বলেন, এরই মধ্যে করোনায় লকডাউন শুরু হলে, যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। হঠাৎ করে পুঁজি হারিয়ে পকেট শূন্য আর ঘুমানোর জায়গায় টুকু হারিয়ে রাতারাতি পথে বসে যাই। আমার  জীবনে চরম দুর্যোগ নেমে আসে।

 

পরবর্তীতে আশরাফের চট্টগ্রাম লোহাগড়ার বাড়িতে তার খোঁজ নিতে গেলে তার অতীত বিভিন্ন প্রত্যারণার তথ্য পাওয়া যায়। এরইমধ্যে আশরাফ দক্ষিণ আফ্রিকায় ফিরে এসেছেন খবর পেয়ে তার সঙ্গে দেখা করতে গেলে তিনি পেছনের দরজা দিয়ে পালিয়ে যান। 

 

সম্প্রতি পাওনাদার আলমগীর জানতে পারে তিনি কেপটাউনের মিসেস প্ল্যান টাউন সেন্টারের চাকরি করছেন। পরে সেখানে ৭ থেকে ৮ জনকে নিয়ে হাজির হন মুন্সিগঞ্জের আলমগীর তালুকদার। সেখানে সালিশি বৈঠকের একপর্যায়ে স্থানীয় সোমালিয়ান গ্যাংস্টারদের ভাড়া করে তিনি পালিয়ে যান শওকত বিন আশরাফ। ঘটনার পর পালিয়ে থেকে তার সিন্ডিকেট লোকজনের মাধ্যমে  আলমগীর তালুকদার ও কেপটাউন কমিউনিটি লোকজনকে মামলা হামলার ভয় ভিতি দিয়ে যাচ্ছে। 

 

দক্ষিণ আফ্রিকায় বাংলাদেশিদের বিভিন্ন  কমিউনিটি লোকজন জানান, শওকত বিন আশরাফ একজন পেশাদার প্রতারক। এক শহরে বেশি দিন থাকেন না। তিনি বিভিন্ন সময় স্থান পরিবর্তন করে নগদ অর্থ হাতিয়ে নিয়ে সুযোগ বুঝে সটকে পড়েন। 

 

তার বিরুদ্ধে দক্ষিণ আফ্রিকার বিভিন্ন থাকায় মামলা করা হয়েছে।  দেশটিতে ঐতিহ্যবাহী কমিউনিটি সংগঠন বাংলাদেশ পরিষদ অরগানাইজেশন বাদী হয়ে জোহানেসবার্গের সেন্ট্রাল পুলিশ স্টেশনে  ২০২২ সালে সেপ্টেম্বরে অভিযোগ দায়ে করা হয়েছে। এছাড়াও, মোশাররফ হোসেন নামের এক ব্যবসায়ী ১০ লাখ রেন্ড প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ আছে।  

 

শওকত বিন আশরাফের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে।  ঘটনার সত্যতা শিকার করে তিনি জানান, তার কাছে টাকা নেই।  দোকান লস করছে দুইজনের সমান ক্ষতি হয়েছে।  অন্যান্য ঘটনা গুলো নিয়ে বলেন, দোকান দিয়েছি ব্যবসা করতে পারিনি বলে মানুষের টাকা দিতে পারিনি।  গাঢাকা কেন দিয়েছিলেন। প্রশ্ন করলেন, তিনি কোনো উত্তর দিতে পারেননি।

 

কেপটাউনে সালিশ নিয়ে কমিউনিটি নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে।  দিদার ও  লিটন মুন্সী জানান, আলমগীর তালুকদারের বিষয়টি সমাধান করার জন্য শওকত বিন আশরাফকে  বৈঠকে উপস্থিতি হতে বলা হয়েছে। সবাই মিলে  ভালো মীমাংসা করার চেষ্টা করবো। 

 

থানায় অভিযোগের বিষয়ে তারা জানান, শওকত বিন আশরাফের বিরুদ্ধে যে-সব থানায় মামলা হয়েছে সেগুলো আমাদের আওতায় নেই। দক্ষিণ আফ্রিকার চলতি আইন অনুযায়ী কোর্টে বিচার হবে। ভোক্তভোগী প্রবাসীরা চাইলে আমরা কমিউনিটি থেকে তাদের পাসে থাকবো।

Side banner