ঢাকা সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১

কম দামে মাংস বিক্রির বিরোধেই মামুনকে হত্যা, অভিযুক্ত গ্রেপ্তার

ভোরের মালঞ্চ | অনলাইন ডেস্ক ফেব্রুয়ারি ৫, ২০২৪, ০৩:৪৭ পিএম কম দামে মাংস বিক্রির বিরোধেই মামুনকে হত্যা, অভিযুক্ত গ্রেপ্তার

কমদামে গরুর মাংস বিক্রি করা নিয়ে বিরোধের জের ধরে রাজশাহীর বাঘায় ব্যাবসয়ী মামুন হোসেনকে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলার প্রধান আসামি মিজানুর রহমান ওরফে খোকনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। গত রবিবার রাতে (৪ ফেব্রুয়ারি) মাদারীপুর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক খোন্দকার আল মঈন এ তথ্য দিয়েছেন।

 

আজ সোমবার দুপুরে র‌্যাবের কারওয়ান বাজার কার্যলয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

 

তিনি বলেন, গত ২০ জানুয়ারি সকাল ৯টার দিকে উপজেলার আড়ানী পৌর বাজারে কম দামে মাংস বিক্রি নিয়ে বাগবিতণ্ডার জেরে ব্যবসায়ী মো. মামুনকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেন মিজানুর রহমান ওরফে খোকন। হত্যাকাণ্ডের পর আসামি বিভিন্ন এলাকায় আত্মগোপনে ছিলেন। এরপর মাদারীপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

 

র‌্যাব জানায়, গত বছর নভেম্বর মাস থেকে রাজধানীর শাজাহানপুরের একজন মাংস ব্যবসায়ী ৫৯৫ টাকায় প্রতি কেজি মাংস বিক্রি শুরু করে। যা সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় ব্যাপক সাড়া ফেলে। পরবর্তীতে ওই মাংস ব্যবসায়ীর দেখাদেখি আরো কিছু মাংস ব্যবসায়ী প্রতি কেজি গরুর মাংস ৬০০ টাকায় বিক্রি করে। 

 

গত বছরের ২২ ডিসেম্বর ভোক্তা অধিদপ্তর, মাংস ব্যবসায়ী সমিতি ও বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মার্স অ্যাসোসিয়েশন সম্মিলিত বৈঠক করে ৬৫০ টাকায় গরুর মাংস বিক্রির সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।

 

এসময় যে সকল মাংস ব্যবসায়ীরা নির্ধারিত মূল্যে মাংস বিক্রি করতে থাকে, মুনাফালোভী অসাধু ব্যবসায়ীরা তাদেরকে নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি দামে মাংস বিক্রি না করলে বিভিন্নভাবে হুমকি প্রদান করতে থাকে। 

 

সাম্প্রতিক সময়ে রাজধানীর শাহাজানপুরে কম দামে মাংস বিক্রি করায় আলোচিত মাংস ব্যবসায়ী খলিলকে হত্যার হুমকি প্রদানকারীকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় নিয়ে এসেছে র‌্যাব। মামুন হত্যার পর গত ২০ জানুয়ারি  সকালে  রাজশাহীর বাঘা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন তার পরিবার। 

 

এরই ধারাবাহিকতায় গত রাতে র‌্যাব-৫ ও র‌্যাব-৮ এর আভিযানিক দল মাদারীপুরের শিবচর এলাকায় অভিযান চালিয়ে মাংস ব্যবসায়ী হত্যাকান্ডের প্রধান আসামি মোঃ মিজানুর রহমান খোকনকে (৩৫) গ্রেপ্তার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃত খোকন মামুন হত্যাকান্ডের সঙ্গে তার সংশ্লিষ্টতার কথা স্বীকার করেছে।

 

র‌্যাব জানায়, নিহত মামুন গ্রেপ্তারকৃত খোকনের নিকট আত্মীয়। তারা রাজশাহীর বাঘা থানার আড়ানি বাজারে একত্রে গরুর মাংস বিক্রির ব্যবসা করত।  কমদামে মাংস বিক্রি করায় মামুনের দোকানে মাংস বিক্রির পরিমান বেড়ে যায়। সেই সঙ্গে খোকনের দোকানে মাংস বিক্রির পরিমান কমে যায়। নির্ধারিত মূল্যে মাংস বিক্রি করা নিয়ে ঘটনার দিন তাদের মধ্যে উত্তপ্ত বাকবিতন্ডের সৃষ্টি হলে খোকন উত্তেজিত হয়ে মাংস কাটার ছুরি দিয়ে মামুনকে প্রকাশ্যে পেটে ও বুকের ডান পাশে উপর্যুপরি আঘাত করে। 

 

এরপর ঘটনাস্থল থেকে কৌশলে পালিয়ে যায় সে। প্রথমে রাজশাহীর তাহিরপুরে তার এক আত্মীয় বাড়িতে অবস্থান করে। পরবর্তীতে মাদারীপুরের শিবচরের কুতুবপুর এলাকায় স্থায়ীভাবে আত্মগোপনের লক্ষ্যে তার পূর্ব পরিচিত এক বন্ধুর মাধ্যমে সেখানে ড্রেজার শ্রমিক হিসেবে কাজ করতে থাকে। মাদারীপুরের শিবচর এালাকায় আত্মগোপনে থাকাকালীন অবস্থায় তাকে গ্রেপ্তার করে।

 

র‌্যাব জানায়, খোকন মাংস ব্যবসার পাশাপাশি মাদক ব্যবসাসহ বিভিন্ন ধরনের অপকর্মের সঙ্গে জড়িত রয়েছে। খোকনের বিরুদ্ধে রাজশাহীর বাঘা থানায় মাদক মামলাসহ বিভিন্ন অপরাধে ৪টি মামলা রয়েছে। এসকল মামলায় সে বিভিন্ন মেয়াদে কারাভোগ করেছে বলে জানা যায়।

Side banner