তিস্তাপাড়ের বানভাসিদের পাশে খাদ্য সহায়তা নিয়ে এগিয়ে এসেছেন বিএনপির রংপুর জেলার নেতৃবৃন্দ। মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) বিকেলে রংপুরের গংগাচড়া উপজেলার মর্ণেয়া ইউনিয়নে নরসিংহপুর দক্ষিণ মৌভাষা আজাদিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে এসব খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হয়।
এ সময় পাঁচ শতাধিক মানুষের মধ্যে চাল, ডাল ও তেলসহ শুকনো খাবার দেওয়া হয়। ত্রাণ পেয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন বানভাসিরা। আয়োজকরা জানিয়েছেন এই সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।
বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন রংপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম। কার্যক্রমে আরও উপস্থিত ছিলেন যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহ-সভাপতি ও রংপুর জেলা যুবদলের সভাপতি নাজমুল আলম নাজু, রংপুর জেলা বিএনপির সদস্য ফিরোজ আলম, লিটন পারভেজ, রাহাত হোসেন, গংগাচড়া উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আখেরুজ্জামান মিলন, গংগাচড়া উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মীর কাশেম মিঠু, নাজিমুদ্দিন লিজু, সদস্যসচিব আইয়ুব আলী, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) শাহ জিল্লুর রহমান, সহ-সভাপতি ফিরোজ সরকার বিপ্লব, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আকিবুর রহমান মনু, সহ-সাধারণ সম্পাদক তামজিদুর রশিদ গালিব, মনিরুজ্জামান সুইডেন, ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক সোহেল রানা, জেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক আনোয়ার শাহাদত, সদস্যসচিব দিল মেরাজুল দুলু, জেলা তাঁতী দলের আহ্বায়ক ফজলে এলাহি ডিউক, জেলা মৎস্যজীবী দলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক রজব আলী সরকার, জেলা ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মোস্তাফিজুর রহমান মিলু, যুগ্ম আহ্বায়ক সজিব খান, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক জুনায়েদ চৌধুরী প্রমুখ।
এ সময় মর্ণেয়া ইউনিয়ন বিএনপির সদস্যসচিব আব্দুল মামুন, যুগ্ম আহ্বায়ক আমিরুল ইসলাম, যুবদল সভাপতি সাজু মিয়াসহ রংপুর জেলা ও গংগাচড়া উপজেলা এবং মর্ণেয়া ইউনিয়ন বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে ভারতের উজানের ঢল আর বৃষ্টির পানিতে রংপুরে তিস্তা নদীতে দুই দিন আগেও বিপৎসীমার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়েছিল। গত দুই দিন ধরে তেমন ভারী বৃষ্টি না হওয়ায় কমতে শুরু করেছে তিস্তার পানি। তবে বর্তমানে বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও বিপদ কাটেনি নদীপাড়ের মানুষের। পানির কমার সঙ্গে সঙ্গে নদীভাঙন তীব্র আকার ধারণ করায় চরম দুশ্চিন্তায় দিন কাটছে তাদের। প্লাবিত নিম্নাঞ্চলের কোথাও কোথাও এখনো পানিবন্দি রয়েছেন মানুষজন।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী, রংপুর বিভাগের ব্রহ্মপুত্র নদের পানি সমতলে হ্রাস পাচ্ছে। ভাটিতে যমুনা নদীর পানি সমতল স্থিতিশীল আছে এবং বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী দুই দিন ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদ-নদীর পানি সমতল হ্রাস পেতে পারে এবং পরবর্তী তিন দিন পানি সমতল ধীরগতিতে বৃদ্ধি পেতে পারে, তবে বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে। এ ছাড়া তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার নদীসমূহের পানি সমতল হ্রাস পাচ্ছে এবং বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী ৩ দিন পর্যন্ত তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার নদীসমূহের পানি সমতলে হ্রাস পেতে পারে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) রংপুরের উপ-সহকারী প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পয়েন্টে সন্ধ্যা ৬টা ও বিকেল ৩টায় পানির প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫১ দশমিক ৫৫ সেন্টিমিটার, যা (স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার) বিপৎসীমার দশমিক ৬০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর আগে দুপুর ১২টায় পানিপ্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫১ দশমিক ৫৭ সেন্টিমিটার, সকাল ৯টায় ৫১ দশমিক ৬০ সেন্টিমিটার এবং সকাল ৬টায় ৫১ দশমিক ৬২ সেন্টিমিটার।
এদিন সন্ধ্যা ৬টায় তিস্তা নদীর কাউনিয়া পয়েন্টে পানির প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ২৮ দশমিক ৮৩ সেন্টিমিটার, যা (স্বাভাবিক ২৯ দশমিক ৩১ সেন্টিমিটার) বিপৎসীমার দশমিক ৪৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়। এর আগে বিকেল ৩টায় বিপৎসীমার দশমিক ৪৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়। এই পয়েন্টে দুপুর ১২টায় ২৮ দশমিক ৯১ সেন্টিমিটার, সকাল ৯টায় ২৮ দশমিক ৯৫ সেন্টিমিটার এবং সকাল ৬টায় ২৮ দশমিক ৯৮ সেন্টিমিটার পানিপ্রবাহ রেকর্ড করা হয়।
তিস্তা বাঁচাও, নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম হক্কানি বলেন, অসময়ের বন্যা ও ভাঙনে প্রতিবছর এক লাখ কোটি টাকার সম্পদ তিস্তার গর্ভে চলে যায়। এই সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য নদী খনন, সংরক্ষণ ও তিস্তা মহাপরিকল্পনার বাস্তবায়ন করা ছাড়া বিকল্প নেই।
আপনার মতামত লিখুন :