‘জালেমের বিদায় হলেও জুলুম থেকে সমাজের মানুষের মুক্তি হয়নি’ -ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম

জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম বলেছেন ‘জালেমের বিদায় হলেও জুলুম থেকে সমাজের মানুষের মুক্তি হয়নি। নতুন উদ্যেমে সমাজে আবার চাঁদাবাজী, খুন-খারাপি, নারীদের অপমান ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অস্থিরতা শুরু হয়েছে। আওয়ামীলীগ কখনো হিন্দুদের নামে, কখনো রিকশাওয়ালা, কখনো আনসারের নামে বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করতে চায়।  

তিনি বলেন, যে ভারত শেখ হাসিনাকে দিয়ে বাংলাদেশকে শাসন এবং শোষণ করতো। এ পুতুল সরকারের বিদায়ের মধ্যে দিয়ে তারাও এখন বেপরোয়া হয়ে গেছে। ভারত আমাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ত্বের দিকে আগুল তুলে হুমকার দেয়। এসময় ভারতকে হুশিয়ারী দিয়ে ড. রেজাউল করিম বলেন, স্বৈরাচারের কবল থেকে বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষ শিশু থেকে বৃদ্ধ পর্যন্ত ছাত্র-জনতা ঐক্যবদ্ধ ভাবে লড়াই করে যেভাবে মুক্তিকে নিশ্চিত করেছে। আগামী দিনে ইসলাম, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ত্বের জন্য সবাই ঐক্যবদ্ধ ভাবে লড়াই করবে ইনশাআল্লাহ।

রেবিবার (১৫ ডিসেম্বর) সকালে লক্ষ্মীপুর আলীয়া মাদ্রাসায় শীতার্তদের মাঝে কম্বল বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। জামায়াতে ইসলামী লক্ষ্মীপুর শহর শাখার উদ্যোগে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।  

ড.রেজাউল করিম বলেন, আজকে রাষ্ট্রে যে দূর্নীতি, সন্ত্রাস ও অপকর্ম হয়েছে এটি জাতি হিসেবে আমাদের জন্য খুবই অপমানজনক। ক্ষমকার জন্য শিশু-বৃদ্ধকে হত্যা, আলেম-ওলামাদের জবাই করাই ছিলো একমাত্র আওয়ামীলীগই কাজ। এমনকি ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর লাশের উপর নাচানাচিও করেছে আওয়ামীলীগ। সমাজকে ভালো করার জন্য ইসলামের দ্বীনের কথা বলতেন মাওলানা দেলোয়ার হোসেন সাঈদী, শহীদ মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী, আলী হাসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, তাদেরকে বিচারিক কায়দায় হত্যা করেছে। এমনকি জামায়াত নেতা ডাঃ ফয়েজ আহম্মেদকে নির্মম ভাবে হত্যা করেছে তারা। সেই সময়ের খুন-সন্ত্রাসীর কথা র‌্যাব এখন অকপটে স্বীকার করেছে। স্বীকার করেছে আয়না ঘরের কথাও।  

আজকের দিনে দ্রব্য মূল্যের উর্ধ্বগতির কারণ আওয়ামীলীগ উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, আজকে দেশের মানুষ খেটে খায়। বাজারে গেলেই দ্রব্য মূল্যের ভয়াবহ পরিস্থিতি। অথচ আওয়ামীলীগ বিগত দিনে রাষ্ট্র থেকে ২৮ লাখ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে। সর্বশেষ সময়ে তারা সাড়ে ১৬ হাজার সাধারণ মানুষ হত্যা করেছে। ফলে মানুষ খুন, রাহাজানি এগুলো ছিলো আওয়ামীলীগের ক্ষমতায় মছনদে থাকার আয়োজন। দূর্ণীতি তাদের অন্যতম ভাষণা হিসেবে কাজ করেছে। বাংলাদেশে দূর্নীতি না থাকলে সৎ নেতৃত্বে মালেশিয়া, সিঙ্গাপুরসহ উন্নত রাষ্ট্র অতিক্রম করতে স্বক্ষম হবে। আল্লাহর আইন তথা সৎ নেতৃত্বে দেশে প্রতিষ্ঠা হলেই উন্নত রাষ্ট্রগড়া সম্ভব বলে জানান জামায়াতের এ নেতা।

লক্ষ্মীপুর শহর জামায়াতের আমীর এড. আবুল ফারাহ নিশানের সভাপতিত্বে এতে উপস্থিত ছিলেন শহর জামায়াতের নায়েবে আমীর মাওলান জহিরুল ইসলাম, শুরা ও কর্মপরিষদ সদস্য শামছুল হুদা, জামায়াত নেতা আমির হোসেন, হেলাল উদ্দিন, শহীদ উল্লাহ সুমন, ফিরোজ আলম, নুরন্নবী ফারুক, জামাল উদ্দিন প্রমুখ।

বক্তব্য শেষে ২ শতাধিক অসহায় বৃদ্ধসহ নারী-পুরুষের মাঝে কম্বল বিতরণ করা হয়।