ঢাকা রবিবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১

ইজতেমা ময়দানে জুবায়ের ও সাদপন্থিদের সংঘর্ষ, নিহত ২

ভোরের মালঞ্চ | অনলাইন ডেস্ক ডিসেম্বর ১৮, ২০২৪, ১১:২১ এএম ইজতেমা ময়দানে জুবায়ের ও সাদপন্থিদের সংঘর্ষ, নিহত ২

গাজীপুরে টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে মাওলানা সাদ ও জুবায়েরপন্থিদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের দুই মুসল্লি নিহত ও বেশ কিছু মুসল্লি আহত হয়েছেন।

 

বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) ভোরে ইজতেমা ময়দানের বিদেশি নিবাসের ছাউনিতে এ ঘটনা ঘটে। টঙ্গী পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইস্কান্দার হাবিবুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

 

নিহত ব্যক্তিরা হলেন কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার জুবায়েরপন্থি সাথি মো. আমিনুল ইসলাম বাচ্চু ও বগুড়া জেলার সাদপন্থি সাথি তাইজুল ইসলাম।

 

এ ব্যাপারে টঙ্গী পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইস্কান্দার হাবিবুর রহমান বলেন, ‘ইজতেমা ময়দানে দুই পক্ষের সংঘর্ষে দুজন নিহতের খবর পেয়েছি। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।’

 

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ব ইজতেমার আগে আগামী ২০ ডিসেম্বর থেকে পাঁচ দিনের জোড় ইজতেমা করার জন্য সাদ অনুসারী মুসল্লিরা ইজতেমা ময়দানে প্রবেশের চেষ্টা করছিলেন। আর সাদপন্থিরা যেন ইজতেমা ময়দানে প্রবেশ করতে না পারেন সেজন্য আগে থেকেই ময়দানে অবস্থান করছিলেন জুবায়েরপন্থিরা।

 

মঙ্গলবার দিবাগত রাত তিনটার পর মাওলানা সাদ অনুসারী শত শত মুসল্লি কামারপাড়া ব্রিজ পার হয়ে ইজতেমা ময়দানের বিদেশি নিবাসের গেট দিয়ে ময়দানে প্রবেশ করেন। এসময় ইজতেমা ময়দানের ফটকে জুবায়ের অনুসারীরা পাহারায় থাকায় তাদের মারধর করে ফটক খুলে ময়দানে প্রবেশ করেন সাদপন্থিরা। ময়দানের বিভিন্ন স্থানে ঘুমিয়ে থাকা জুবায়েরপন্থি মুসল্লিদের ওপর হামলা চালান মাওলানা সাদের অনুসারীরা। এতে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের বেশ কিছু মুসল্লি আহত হন। তাদের উদ্ধার করে টঙ্গী শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতাল ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

 

তাবলীগ জামাত বাংলাদেশের (শুরায়ি নেজাম) মাওলানা জুবায়ের অনুসারী মিডিয়া সমন্বয়কারী হাবিবুল্লাহ রায়হান বলেন, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে বুধবার দুপুর ১২টায় তাদের গুরুত্বপূর্ণ সভা করার কথা। সুন্দর একটি সিদ্ধান্ত জানানোর পরিকল্পনা করেছিলেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের হাসনাত আব্দুল্লাহ ও সারজিসসহ কয়েকজন সমন্বয়ক রাত আড়াইটায় কাকরাইল মসজিদে আমাদের সঙ্গে আলোচনাও করেছিলেন কীভাবে সমস্যা সমাধান করা যায়। একটু পরই খবর আসে সাদপন্থিরা আশপাশ থেকে বিভিন্ন গুন্ডা সন্ত্রাসী ভাড়া করে এবং বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের নতুন, পুরাতন সমস্ত সাথি জমা করে টঙ্গী ময়দানের বিদেশি তাবু ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে। সাদপন্থিরা কোনোভাবেই প্রশাসনিক কোনো সিদ্ধান্ত পাচ্ছে না দেখে মাঠে ইজতেমার কাজে নিয়োজিত ঘুমন্ত তাবলীগের সাথিদের ওপর রাত চারটার দিকে সন্ত্রাসীমূলক হামলা চালায়। এতে বিপুল সংখ্যক সাথি আহত হয় এবং ঘটনাস্থলেই মো. আমিনুল ইসলাম বাচ্চু নামে আমাদের একজন সাথি নিহত হয়েছেন। বর্তমানে প্রচুর দাওয়াত ও তাবলীগের সাথি ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। কিছুক্ষণ আগে ঢাকা মেডিকেলে আমাদের আরও একজন মারা যান। তবে তার নাম জানতে পারিনি।

 

এদিকে মাওলানা সাদ অনুসারী মিডিয়া সমন্বয়কারী মো. সায়েম জানান, শান্তিপূর্ণভাবে তাদের সাথিরা ইজতেমা ময়দানে প্রবেশের চেষ্টাকালে জুবায়ের অনুসারীরা হামলা চালায়। এতে তাইজুল ইসলাম নামের এক সাথি নিহত হন।

 

তিনি অভিযোগ করেন, বিভিন্ন জায়গায় তাদের সাথিদের বাধা দেওয়া হচ্ছে। জেলায় জেলায় প্রশাসনের লোক তাদের সাথিদের বহনকারী গাড়ি আটকে দিচ্ছে ও ফেরত পাঠাচ্ছে।

Side banner